এবিএনএ: বর্তমান সরকারের সপ্তম জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চারটি সংশোধিতসহ মোট ৭ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১০ হাজার ১১৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার ব্যয় করবে ৪ হাজার ৪০৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন ৪৮৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ঋণ নেয়া হবে ৫ হাজার ২২০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, সভায় চারটি সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয়বারের মতো সংশোধন করা হয়েছে ‘সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ প্রকল্প’। এতে বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৩ হাজার ৯৭১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার অর্থায়ন করছে ৫৪০ কোটি ৫১ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৪৮৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং ঋণ ২ হাজার ৯৪১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। ২০০৯ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প শেষ হবে ২০২০ সালের জুনে।
এছাড়া আজকের বৈঠকে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ‘চট্টগ্রাম-ফেনী-বাখরাবাদ গ্যাস সঞ্চালন সমান্তরাল পাইপলাইন নির্মাণ’ প্রকল্প প্রথমবারের মতো সংশোধন করা হয়েছে। ২ হাজার ৪৭৯ কোটি ৪১ লাখ টাকার এই প্রকল্প ২০২০ সালের জুনের মধ্যে শেষ করা হবে। এতে সরকার অর্থায়ন করছে ১ হাজার ৭৪৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২০ লাখ টাকা এবং প্রকল্প ঋণ ৭৩৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের ‘প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন’ প্রকল্পও তৃতীয়বারের মতো সংশোধন করা হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এতে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ৭৪৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২০৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে সরকার এবং বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে ১ হাজার ৫৪৪ কোটি ১২ লাখ টাকা। শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘বিসিক কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, মুন্সিগঞ্জ’ প্রকল্প প্রথমবারের মতো সংশোধন করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প ২০২১ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে এর মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে এই প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ৬১৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
নতুন প্রকল্প তিনটির মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণ’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৭৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর সম্পূর্ণ অর্থই সরকারি কোষাগার থেকে দেয়া হবে। এটি বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০১৯ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘সমাজকল্যাণ ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৭৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘নীলফামারী জেলার চাড়ালকাটা নদী সোজাকরণ এবং বুড়িতিস্তা নদীর তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৪৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এর পুরোটাই বহন করবে সরকার। প্রকল্পটি ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।